কেশবপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি শূন্য থাকায় চরম বিপাকে হাজারো মানুষ।

স্টাফ রিপোর্টার
0

 


পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর, দৈনিক সারা দুনিয়া।


কেশবপুর উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার পদটি দীর্ঘ এক মাস শূন্য থাকায় ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার হাজার হাজার মানুষ ভূমি সংক্রান্ত সেবা থেকে বঞ্চিত এবং চরম বিপাকে পড়েছেন। জমির মালিকেরা নামজারি জমা খারিজের জন্য আবেদন ফাইল অফিসের টেবিলে স্তুপ হয়ে জমে আছে। যার ফলে সাধারণ জনগণ বেশ ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। তবে, আগামী সপ্তাহে নতুন সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা যোগদান করবেন বলে ভূমি অফিস কর্তৃপক্ষ জানান।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ তানভীর হোসেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সিনিয়র সহকারী সচিব) হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় Georgia Institute of Technology, USA-তে বৈদেশিক মাস্টার্স কোর্সে অধ্যয়নের জন্য চলতি বছরের ১ আগস্ট কেশবপুরের কর্মস্থল থেকে বদলি হয়ে চলে যান। তিনি চলে যাওয়ার পর থেকে পদটি শুন্য হয়ে পড়ে। সেই থেকে ভূমি অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। 

তবে দীর্ঘদিন নতুন সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসার যোগদান না করায় উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো না থাকায় জমির মালিকেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। নামজারি জমা খারিজের অভাবে জমি ক্রয়-বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। জমির মালিকেরা প্রায় ৩-৪ মাস আগে নামজারি জমা খারিজের আবেদন করেও এখন পর্যন্ত জমির নামজারি জমা খারিজ করতে পারেননি বলে অভিযোগ অনেকেরই। কবে নাগাদ জমা খারিজ হবে তাও নিশ্চিত করে অফিস কর্তৃপক্ষের কেউই বলতে পরাছেন না। তবে আগামী সপ্তাহে যোগদান করবেন বলে জানান।

কেশবপুর রেজিস্ট্রি অফিসে জমি দলিল করতে আসা উপজেলার চিংড়া গ্রামের মৃত রহমতুল্যা মোড়লের ছেলে মানিক মোড়লের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গত ৩ মাস আগে ভূমি অফিসে জমির নামজারি করতে আবেদন দিয়েছি। অফিসে ভূমি কর্মকর্তা না থাকায় নামজারি করতে পারছিনা। তার জন্য আমার ক্রয়কৃত জমির দলিল করতে পেরে বেশ ভোগান্তিতে আছি। আরেক ভোগান্তির শিকার স্বামীহারা ফতেপুর গ্রামের রোমেছা বেগম বলেন, প্রায় ৭/৮ মাস আগে জমির নামজারির আবেদন করেও এখন পর্যন্ত খারিজ করতে পারিনি। যার কারণে জমি বিক্রয় করতে না পেরে আমি চরম বিপাকে পড়েছি। কবে নাগাদ জমা খারিজ হবে তাও অফিস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে বলতে পারছেনা। শুধু বলছে স্যার আসলে হবে। 

দলিল লেখক রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা না থাকায় জমির মালিকদের নামজারি আবেদন খারিজ হচ্ছেনা। তাতে করে জমি ক্রয়-বিক্রি অনেকটা কমে গেছে। দুর-দুরান্ত থেকে এসে জমির মালিকেরা দলিল না করতে পেরে নিরুপায় হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। জমির মালিকের পাশাপাশি আমরাও বেশ ভোগান্তিতে আছি।

এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা বলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি খালি থাকায় জমিজমা সংক্রান্ত অনেক ফাইল পড়ে রয়েছে। গত এক মাসের ভূমি সংক্রান্ত বহু মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছেনা। জমির নামজারি জমা খারিজের প্রায় ৫/৭ শত আবেদন অফিসে জমে আছে। এগুলো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষর না হওয়ায় আবেদনকারীরা কিছুটা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তবে আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে নতুন স্যার যোগদানের পর জমির মালিকদের ভোগান্তি কমে যাবে। 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তুহিন হোসেন জানান, আগামী সপ্তাহে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা যোগদান করবেন। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন হিসেবে ভূমি অফিসের জরুরি কিছু কাগজপত্রে স্বাক্ষর করা হচ্ছে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)