পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর, দৈনিক সারা দুনিয়া।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়ে মারপিট ও ছুরিকাঘাতে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় যশোর-৬ কেশবপুরের সাবেক এমপি আজিজুল ইসলাম (খন্দকার আজিজ)-সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কেশবপুর পৌরশহরের আলতাপোল গ্রামের আব্দুস সালাম বিশ্বাসের ছেলে মিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই মামলাটি করেছেন। মামলার প্রধান আসামি হলেন, উপজেলার ব্রহ্মকাটি গ্রামের মৃত রফিক খন্দকারের ছেলে কেশবপুরের সাবেক এমপি আজিজুল ইসলাম (৩০)।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাবদিয়া গ্রামের দবির হোসেনের ছেলে কবির হোসেন (৩২) একই গ্রামের বাবুল গাজীর ছেলে টিপু সুলতান (২৬), ব্রহ্মকাটি গ্রামের এমপির আপন ভাই শরিফুল ইসলাম (৩৫), একই গ্রামের জহুর মোড়লের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৮), লতিফ গাজীর ছেলে তরিকুল ইসলাম (৩৫), তবিবর রহমানের ছেলে তুষার (২৬), আঃ রহমান গাজীর ছেলে জামির হোসেন (৩০), আলতাপোল (উপজেলা অফিস পাড়ার) মৃত জাহাঙ্গীর কবীরের ছেলে সৌরভ হোসেন (৩২), বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাসান (৩০), খতিয়াখালি গ্রামের অধ্যয়িত দাসের ছেলে শ্রীকান্ত দাস (২৭), ব্যাসডাঙ্গা গ্রামের নিজামুউদৌল্লার ছেলে তানজিম (৩০), পারভেজ (২৭), লক্ষীনাথকাটি গ্রামের আলাউদ্দীন দপ্তরীর ছেলে তরিকুল ইসলাম (৩৪), বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রাজার ছেলে আশিক (২৭), একই গ্রামের দিপু দাসের ছেলে সুজন দাস (২৮), পাথরা গ্রামের হালিমের ছেলে পারভেজ (২৬), সাহাপাড়ার কার্ত্তিক সাহার ছেলে প্রান্ত সাহা (২৬), মাগুরাডাঙ্গা গ্রামের মারুফ হোসেন (২২) ও চিংড়া গ্রামের তুহিন রেজা (২০) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০/৩০ জন।
থানার মামলা সুত্রে জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ব-ঘোষিত কর্মসূচির আলোকে গত ৪ আগস্ট দুপুর অনুমান ২:৩০ ঘটিকার সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেশবপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজ মাঠে আসতে শুরু করেন। এমতাবস্থায় কেশবপুরের এমপি আজিজুল ইসলামের নির্দেশক্রমে পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী সকল আসামিরা বেলা অনুমান ২.৫০ ঘটিকার সময় পরস্পরায় কলেজ মাঠে মূল ভবনের সামনে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা করেন। ওইসময় হাসান ও তানজিমের হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মিরাজুল ইসলামকে খুন করার উদ্দেশ্যে আঘাত করতে গেলে সাথে থাকা ছাত্রনেতা অহিদুর রহমান অন্তু বাধা দিলে তার ডান হাতের তালুতে লেগে কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। হামলাকারী তরিকুল ইসলামের হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সঙ্গীয় আব্দুল হালিম অটল বিশ্বাসের মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে এবং পারভেজ ও পারভেজের হাতে থাকা রাম দা দিয়ে আন্দোলনে থাকা সাহেদ আলী, মাছুম, মিরাজ ও পলাশের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা রক্তাক্ত জখম করে। এছাড়াও অন্যান্য আসামিরা লোহার রড়, বাঁশের লাঠি, হাতুড়ি দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। ওইসময় এলাকাবাসী ও ছাত্র-জনতারা ছুটে আসলে সকল আসামিরা বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও খুন জখমের হুমকি-ধামকি প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ওইসময় ছাত্র-জনতা আহতদের উদ্ধার করে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন এবং পলাশের শরীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। বর্তমানে তিনি বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসার পর সুস্থ্য হয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে কেশবপুর থানায় একটি মামলা করেন। থানার মামলা নং-৭।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল আলম বলেন, মারপিঠের ঘটনার পর থেকে সকল আসামিরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।