পরেশ দেবনাথ, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি , দৈনিক সারা দুনিয়া।
বাঘারপাড়া উপজেলায় সম্প্রীতি বজায় রাখতে পিএফজির মাধ্যমে ধর্মীয় উপাসনালয় পরিদর্শন ও মতবিনিময় বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
গত বুধবার (১৪ আগষ্ট-২৪) বাঘারপাড়া উপজেলা সংলগ্ন চৌরাস্তার মোড়ে পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পি. এফ. জি) এবং সুজন, বাঘারপাড়া, যশোরের আয়োজনে ওই কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য। ধর্মীয় বিভাজন ভুলে প্রতিটি ব্যাক্তিই মানুষ এবং নাগরিক হিসাবে প্রত্যেকটি মানুষের আছে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করার অধিকার কিন্তু বেশিরভাগ সময় ধর্মীয় গোড়ামি সামনে এনে মানুষকে হিংসা ও বিদ্যেষপূর্ন আচরণের মাধ্যমে আহত করা হয় যা গত ৫ আগষ্ট ২০২৪ তারিখে প্রকট আকারে বাংলাদেশে তথা বাঘারপাড়া উপজেলাতে পরিলক্ষিত হয়। তবে দি হাঙ্গার প্রজেক্টের এমআইপিএস প্রকল্পের বাঘারপাড়া উপজেলায় পিএফজির মাধ্যমে সহিংসতা প্রতিরোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয় কিন্তু উপজেলার সকল ক্ষেত্রে এ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি।
তাই গত ১৪ আগষ্ট বাঘারপাড়া উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বিশেষ করে সহিংসতা প্রবন এলাকাতে ধর্মীয় উপাসনালয় পরিদর্শন ও মতবিনিময় বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। সেই সাথে বাঘারপাড়ার বীর প্রতীক ইসহাক মহাবিদ্যালয়ে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার বিষয়ে সনাতন ধর্মের শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করা হয়।
এই কার্যক্রমে অংশগ্রহন করে, বাঘারপাড়া পিএফজি- এর কোঅর্ডিনেটর জনাব ইকরামুল কবির মিঠু, পিস এ্যাম্বাসেডর অধ্যক্ষ মোঃ মোস্তাক মোর্শেদ, দিলরুবা পারভিন, মোঃ হাফিজুর রহমান, মোঃ জাকির হোসেন, অজয় বিশ্বাস, আদিবাসি সভাপতি প্রহল্লাদ বিশ্বাস, সাংবাদিক সাঈদ ইবনে হানিফ, ইউপি মেম্বার আমেনা খাতুন এবং ওয়াইপিএজির মোস্তফা আমির ফয়সাল-সহ অন্যান্য ব্যাক্তিগণ। সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন, এমআইপিএস প্রকল্পের ফিল্ড কোঅর্ডিনেটর জনাব মোঃ আশরাফুজ্জামান।
পরিদর্শনকালীন সময়ে সনাতন ধর্মাবলম্বিদের ভিতর ভয় ও হতাশা পরিলক্ষিত হয়। তারা বলেন, আমরাও মানুষ, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক তবে কেন এমন ক্রান্তিলগ্নে আমরা হামলা নির্যাতনের স্বীকার হবো? তবে রাজনৈতিক দলের সদস্য-সহ সকল ধর্মের মানুষ তাদের সহযোগীতায় এগিয়ে এসেছেন বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উক্ত আয়োজনে পিএফজি প্রতিনিধিরা বলেন, একটি স্বাধীন দেশে সকলের স্বাধীনভাবে বসবাস করার নাগরিক অধিকার রয়েছে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও নৃগোষ্ঠিগত সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে যা কোনভাবে কাম্য নয়। বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের মন্দির, ঘরবাড়ি পোড়ানো ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি একটা জাতি বা সমাজের জন্য খুবই ক্ষতিকর দিক বলে গন্য হয় যা একটা সুস্থ্য সমাজে কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। তাই প্রতিনিধি হিসাবে আপনাদের পাশে থেকে আমরা সহিংসতা নিরসনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। যেকোন পরিস্থিতিতে সকল মন্দির কমিটির সভাপতি, সেক্রেটারি ও সকল সদস্যকে যোগাযোগ করার আহ্বান জানানো হয় ।
সবশেষে পিএফজির সকল সদস্যরা প্রবিন শিক্ষক বিনয় কুমার বিশ্বাসকে দেখতে যান। তাকে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন এবং অপমানিত করা হয়েছে যা পরবর্তিতে আর না ঘটে সে লক্ষ্যে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যাক্ত করা হয়। এরপর খাজুরাই ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্ব ব্যাক্তি জনাব অধ্যক্ষ নাজমুল হুদার সাথে সম্প্রীতি বজায় রাখার বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম সমাপ্ত করা হয়।