জনসচেতনতা, দৈনিক সারা দুনিয়া।
‘সবাই বিদেশ যাচ্ছে, আমিও যাবো’ –এই চিন্তা থেকে যারা বিদেশ যেতে চায়, তারা অনেকগুলো ভুল করে। এই ভুলের কারণে তাদের বিদেশ যাওয়া বিলম্ব হয়। এমনকি ভুল সংশোধন করতে অনেকের লক্ষাধিক টাকাও ব্যয় করতে হয়!
🔴 ১. আপনি যেদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিদেশ যাবেন, সেটা আগামী মাসে হোক বা ২ বছর পর হোক, আপনাকে অনেকগুলো ডকুমেন্টস রেডি করতে হবে। প্রথমত আপনার ভোটার আইডি কার্ড, আপনার মা-বাবার ভোটার আইডি কার্ড, আপনার জন্ম-নিবন্ধন, আপনার SSC-HSC সার্টিফিকেট, মার্কশিট সবগুলোতে কয়েকটা বিষয় একই আছে কিনা দেখতে হবে।
👉 আপনার নামের বানান (বাংলা-ইংরেজি) সবগুলোতে এক কিনা
👉 আপনার জন্ম-তারিখ এক কিনা
👉 আপনার মা-বাবার নামের বানান এক কিনা
সাধারণত প্রায় ৮০% মানুষেরই এসব ডকুমেন্টসে ভুল থাকে। বিদেশ না গেলেও এগুলো ঠিক করা লাগবে। বিদেশ যেতে চাইলে তো ঠিক না করে উপায় নেই।
🔴 ২. পাসপোর্ট রেডি করে ফেলতে হবে।
আমাদের অনেক শিক্ষার্থী IELTS –এ ভর্তি হবার পর পাসপোর্ট রেডি করে। এটা স্ট্রাটেজিক্যাল ভুল। আপনি IELTS –এ ভর্তিই হয়েছেনই বিদেশ যাবার জন্য। IELTS দিতে চাইলেও পাসপোর্ট থাকাই লাগবে। তাহলে আপনি কেনো IELTS –এর প্রস্তুতি নেবার সময় পাসপোর্ট বানাবেন?
ঐ সময় বেশিরভাগের মনোযোগ বিঘ্ন ঘটে। পাসপোর্ট বানানোর সময় দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। ভুল হলে দুশ্চিন্তা করতে হয়। এর ফলে IELTS প্রস্তুতি কয়েকদিন ঠিকমতো হয় না।
ভালো রেজাল্ট করতে গেলে নির্বিঘ্নে পড়ালেখা জরুরি। এজন্য IELTS –এ ভর্তি হবার আগেই পাসপোর্ট বানানো থেকে শুরু করে ডকুমেন্টস সংশোধনের জন্য যা যা প্রয়োজন, সব তৈরি করে নিন।
🔴 ৩. আপনার সংগৃহীত SSC-HSC সার্টিফিকেট, মার্কশিট এবং অনার্স সম্পন্ন করলে সেটার মার্কশিট শিক্ষা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ভ্যারিফাই করে নিন।
অনেকেই এটা জানেন না। যখন এটা দরকার হয়, তখন দৌড়াদৌড়ি করেন। কেউ কেউ তো আবার এসব কাজের জন্যও দালাল খুঁজেন। এটা একটা বদ-অভ্যাস। কারণ, এখন অনলাইনে খুব সহজে এগুলো শেখা যায়। প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিজে নিজেই প্রায় ৯৫% ভুল সংশোধন করা যায়।
🔴 ৪. আপনি নিজের পাসপোর্ট আবেদন করা নিজেই শিখুন।
শিখতে লাগবে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট, পাসপোর্ট আবেদন করতে লাগবে আরো ১০ মিনিট।
এটা শুধুমাত্র পাসপোর্ট আবেদনের টাকা বাঁচানোর জন্যই করবেন না। বরং এটা একটা স্কিল। বিদেশে গেলে এরকম অনেক কাজ অনলাইনে আপনাকেই করতে হবে, তখন ‘দালাল’ পাবেন না!
আপনি যদি একবার এরকম কাজ করেন, সেটা পাসপোর্টের আবেদন হতে পারে, ভুল সংশোধনের কাজ হতে পারে, আপনার মধ্যে তখন আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে।
আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মবিশ্বাস নেই। তারা অনার্সে পড়ে, অনার্স-মাস্টার্স পাশ করেও নিজের পাসপোর্ট নিজে আবেদন না করে দোকানে গিয়ে করায়। সেই আবেদন তারা করে, যাদের যোগ্যতা তারচেয়েও কম!
সফল হবার অন্যতম শর্ত হলো আত্মবিশ্বাস। এই আত্মবিশ্বাস একবার যদি আপনার মধ্যে তৈরি হয়, আপনাকে কেউ আটকাতে পারবে না।
পৃথিবীর অনেক যোগ্য মানুষও সফল হতে পারে না আত্মবিহস্বাসের অভাবে, অন্যদিকে অনেক কম যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষও সফল হয় শুধুমাত্র আত্মবিশ্বাসের কারণে।
🔴 ৫. আপনি পড়ালেখা ছাড়া কোনোদিন আর কোনো কাজ করেননি। রাঁধতে পারেন না, বাইক চালাতে পারেন না, প্রাইভেট কার চালাতে পারেন না; এমনকি সাইকেল চালাতেও পারেন না।
তাহলে বিদেশ গিয়ে সার্ভাইভ করা আপনার জন্য অনেক কঠিন হবে। এজন্য দেশে থাকতেই আপনি অন্তত চলনসই রান্না এবং প্রাইভেট কার বা অন্তত সাইকেল চালানো শিখে ফেলুন।
দেশে অনেক কাজ ম্যানুয়ালি হয়। কিন্তু, বিদেশে গেলে বেশিরভাগ কাজ কম্পিউটারে করতে হবে। কম্পিউটারের বেসিক ফাংশন শিখে নিন।
আমাদের দেশে যেরকম রাস্তার পাশেই কম্পিউটারের দোকানে গেলে সব আবেদন করে দেয়, বিদেশে এই সুযোগ যেমন কম, তেমনি ডলার-পাউন্ড ব্যয় করেই এগুলো করতে হবে।
অথচ নিজে সপ্তাহখানেক বা মাসখানেক সময় দিয়ে এগুলো শিখতে পারলে তখন কারো মুখাপেক্ষী হওয়া লাগবে না।
আপনি সোস্যাল মিডিয়ায় share করলেই আপনার কাছের মানুষজনও উপকৃত হবে। সূত্র: এফবি