পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর, দৈনিক সারা দুনিয়া।
যশোরের কেশবপুর পৌরসভায় আইওজিআইপি প্রকল্পের আওতায় সড়ক নির্মান কাজে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় নির্মান কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তুহিন হোসেন।
বুধবার (২৬ জুন) এলাকার মুক্তিযোদ্ধাসহ মহল্লাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পৌর সভার ৭নং ওয়ার্ডের মধ্যকুল নাথপাড়া সড়ক পরিদর্শন করেন, সড়ক নির্মানে সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করে নিম্নমানের খোয়া-বালি ব্যবহার করায় ওই সড়ক নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। এসময় এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ধন্যবাদ জানিয়ে সিডিউল অনুযায়ী এই সড়কটি নির্মানের জন্য তার কাছে দাবী জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাংবাদিকদের জানান, তার চাকুরী জীবনে এত নিন্মমানের কাজ তিনি আর কোথাও দেখেননি বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিশেষ আইওজিআইপি প্রকল্পের আওতায় ৪টি প্যাকেজে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কেশবপুর পৌরসভার সড়ক ও ড্রেনসহ অবকাঠামো নির্মানের জন্য প্রকল্প গ্রহন করা হয়। প্রকল্প অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দপ্তর ওই প্রকল্পের জন্য টেন্ডার আহবান করেন। সর্বনিন্ম দরদাতা হিসেবে ৪টি প্যাকেজের কাজগুলি পান যশোরের ঠিকাদারী প্রতিষ্টান বনাত্তরের আবু সাঈদ।
এই প্রকল্পের আওতায় পৌরসভার ০৭ নং ওয়ার্ডে মধ্যকুল নাথ পাড়ার কবির হোসেনের বাড়ির পাশ থেকে যশোর-সাতক্ষীরা মেইন সড়ক পর্যন্ত ৮৩০ মিটার লম্বা আরসিসি সড়কটি নির্মানে ১নং ইটের খোয়া, বালি প্রয়োজনীয় সিমেন্ট ব্যবহার করে, সড়কটির তলদেশে ৪ ইঞ্চি সিসি ঢালাই এবং উপর অংশে ৭ ইঞ্চি আর সিসি ঢালাই দিয়ে সড়কটি নির্মানের কাজ করার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার আবু সাঈদ, এই সড়ক নির্মানে ৩নং ইটের খোয়া, মাটি মিশ্রিত ভিট বালি এবং সিডিউল অনুযায়ী সিমেন্ট ব্যবহার না করে যেনতেন ভাবে সড়কটি নির্মান করছেন।
বিষয়টি দেখে এলাকার মুক্তিযোদ্ধাসহ মহল্লাবাসীরা ঠিকাদারকে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করার জন্য তাকে অনুরোধ করেন। কিন্তু ঠিকাদার তাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে একই ভাবে কাজ অব্যাহত রাখেন। পরবর্তিতে মহল্লাবাসীরা এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করলে নির্বাহী অফিসার বুধবার (২৬ জুন) বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে যান। এসময় তিনি দেখতে পান এই সড়ক নির্মানে নিন্মমানের ইটের খোয়া ব্যবহারসহ সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করায় ওই সড়কের নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। গত ২৩ জুন থেকে এই সড়কটির সিসি ঢালাইয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে।
ঠিকাদার আবু সাঈদ বলেন, সিডিউল অনুযায়ী মধ্যকুল নাথপাড়া সড়ক নির্মানে সিসি ঢালাইয়ের কাজ চলছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোন কারণে কাজটি বন্ধ করে দিলেন তা তার জানা নেই।
এব্যাপারে কেশবপুর পৌর সভার নির্বাহী প্রকৌশলী এম এম নুর আহম্মেদের নিকট জানতে চাইলে তিনি কোন তথ্য না দিয়ে পৌর মেয়র রফিকুল ইসলামের সাথে কথা বলতে বলেন।
এব্যাপারে পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল বলেন, সিডিউল অনুযায়ী ঠিকাদার সড়টির নির্মান কাজ করছেন। যা পৌর সভা থেকে তদরকি করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তুহিন হোসেন বলেন, মহল্লাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মধ্যকুল নাথপাড়া সড়কে নির্মানের কাজে দেখা যায়, সড়ক নির্মানে একেবারে নিন্মমানের ইটের খোয়া ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে এবং ঢালাইয়ে প্রয়োজনীয় সিমেন্টও ব্যবহার করা হচ্ছেনা। তাই সড়কটির নির্মান কাজ আপাতত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
প্রকল্পের সামনে প্রকল্পেন সাইন বোর্ড লটকানোর কথা থাকলেও এ প্রকল্পে তা মানা হচ্ছেনা। এতে সিডিউল অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।