পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর, দৈনিক সারা দুনিয়া।
কেশবপুরে রাত পোহালে উপজেলা নির্বাচন-২৪। লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। তিনটি পদে ১৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হাটবাজারসহ পাড়ামহল্লায় ভোট প্রার্থণা করে ব্যাপক গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। চেয়ারম্যান পদে সাতজন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং মহিলা ভাইচ চেয়ারম্যান দুইজন। চেয়ারম্যান পদে ভোটাররা চতুর্মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন। স্থানীয়দের মাঝে চলছে নানা বিশ্লেষণ শেষ মুহূর্তে কে বিজয়ের মালা পরবেন। এ-উপজেলায় প্রথম ধাপে বুধবার (৮ মে) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
চেয়ারম্যানঃ চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে, কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মফিজুর রহমান (ঘোড়া), সাবেক সংসদ সদস্য, আব্দুল হালিম-এর ছেলে মঙ্গলকোট ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ-নূর -আল আহসান বাচ্চু (দোয়াত-কলম), উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম-এর ছেলে, কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না (হেলিকপ্টার), বর্তমান উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাসিমা আক্তার সাদেক (শালিক)। এ প্রার্থীদের মধ্যে সকলেই আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। তাদের মধ্যেই উপযুক্ত একজন প্রার্থী বিজয়ের মালা পরবেন এমনটিই ধারণা কেশবপুরবাসীর।
আর তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক এস এম মাহবুবুর রহমান (মোটরসাইকে), ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুর রহমান (জোড়া ফুল) ও ব্যবসায়ী ইমদাদুল হক (আনারস)।
মফিজুর রহমানঃ উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মফিজুর রহমান (ঘোড়া)। তিনি আগে থেকেই নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন, যিনি অনেক দিন ধরে দলের সম্পাদকীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। ভোটাররা জানিয়েছেন, প্রচার-প্রচারণায় তিনি অন্যদের থেকে এগিয়ে আছেন।
আব্দুল্লাহ-নূর-আল আহসান বাচ্চুঃ যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, তুখোড় রাজনীতিবিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতৃত্বদানকারী আব্দুল হালিম পরিবারের ছেলে মঙ্গলকোট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ-নূর-আল আহসান বাচ্চু (দোয়াত-কলম) নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সাবেক সংসদ সদস্য, তুখোড় রাজনীতিবিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতৃত্বদানকারী আব্দুল হালিম জয়ের ব্যপারে নিজেই ভূমিকা নিচ্ছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দুর্দিনে আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। রাজনীতিতে নিজেদের পূর্বের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতেই বাচ্চু এ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। হয়তো এবার সফলতা অর্জন সম্ভব হবে।
মুজাহীদুল ইসলাম পান্নাঃ বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম নির্বাচনে প্রার্থী না হলেও তার ছেলে উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক কাজী মুজাহীদুল ইসলাম পান্না (হেলিকপ্টার) প্রার্থী হয়েছেন। মুজাহীদুল ইসলাম-এর ভাইও সাগরদাঁড়ি ইউপি'র বর্তমান চেয়ারম্যান। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান তাদের পরিবারের রাজনৈতিক ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য ছেলে পান্নাকে প্রার্থী করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন মহল।
নাসিমা আকতার সাদেকঃ এদিকে, দুইবার নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাসিমা আকতার সাদেক (শালিক) আবারও চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। তিনি প্রয়াত শিক্ষামন্ত্রী এ,এস,এইচ,কে সাদেক ও প্রয়াত প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক পরিবারের সদস্য হিসেবে তাদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক পলাশ কুমার মল্লিক (উড়োজাহাজ), সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ রানা (মাইক), সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুমন সাহা (চশমা), আব্দুল্লাহ আল মামুন (তালা) ও মনিরুল ইসলাম (টিউবওয়েল) নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। এদের মধ্যে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান পলাশ কুমার মল্লিকের (উড়োজাহাজ) সাথে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুনের (তালা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন।
মহিলা ভাইচ চেয়ারম্যানঃ পদে উপজেলা মহিলা লীগ সভনেত্রী রাবেয়া খাতুন (ফুটবল) ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর মনিরা খানম (কলস) প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ফুটবল প্রতীকের রাবেয়া খাতুন গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন। তবে জয় পেতে সব প্রার্থীই দিনরাত সমানতালে প্রচার- প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটাদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তারা দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, কেশবপুর উপজেলা পরিষদ ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ২০ হাজার ৯৫৪ জন। এর ভেতর পুরুষ ভোটার এক লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ জন, নারী ভোটার এক লাখ নয় হাজার ১৭৭ জন ও হিজড়া দুই জন। মোট ৯৫টি কেন্দ্রে ৮ মে প্রথম ধাপে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।