পরেশ দেবনাথ, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি, দৈনিক সারা দুনিয়া।
ডুমুরিয়া'র সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, অবসরপ্রাপ্ত কৃষিবিদ ও বহু প্রতিভার অধিকারী বরেণ্য ব্যাক্তিত্ব রবীন্দ্রনাথ মল্লিক (৬৫) আর নেই। ডুমুরিয়ার বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ও কৃষিবিদ রবীন্দ্রনাথ মল্লিক দীর্ঘ রোগ ভোগের পর খুলনা ২৫০ বেড হাসপাতালে বৃহস্পতিবার (১৬ মে-২৪) দুপুর বেলা ১.৩০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর কালীতলা এলাকার বাসিন্দা বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের শাস্ত্রীয় ও নজরুলগীতির নন্দিত কণ্ঠশিল্পী ও গীতিকার, বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি-পুরস্কারপ্রাপ্ত (১৪১৫ ইং) রবীন্দ্রনাথ মল্লিক, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর, সামাজিক- সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক সংগঠক ও গবেষক, কবি, বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভি-কথক, গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ-গবেষক এবং জীবনজাগরণদীপ্ত সঙ্গীতশিল্পী ও ধানফুল সাহিত্য গোষ্ঠীসহ অসংখ্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি ড. সন্দীপক মল্লিক-এর বড়ভাই।
ড. সন্দীপক মল্লিক জানান, কয়েক বছর আগে ডুমুরিয়া উপজেলার সহকারী কৃষি অফিসার হিসেবে অবসর নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীদের গান শেখাতেন। বহু বছর ধরে রবীন মল্লিক মা-মাটি মনিন্দ্র-সাবিত্রি তথা তার বাবা-মায়ের নামে নিজের খরচে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ফলজ ও বনজ গাছ লাগাতেন। বৃক্ষপ্রেমের জন্যই তিনি বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। তিনি খুলনা বেতারের নিয়মিত সংগীত শিল্পী ছিলেন। অনেক প্রতিভার অধিকারী সদালাপী হাস্যজ্জল এই মানুষটি চলতি বছর মার্চ মাসে চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়ায় যান। সেখানে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে গত ৯ এপ্রিল দেশে ফিরে এসে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হাজারো সংগীত শিল্পী তৈরির কারিগর অসাম্প্রদায়িক রবীন মল্লিক মৃত্যুকালে স্ত্রী ও একমাত্র পুত্রসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী, আত্মীয়-স্বজন ও গানের ছাত্র-ছাত্রী রেখে গেছেন। বৃহস্পতিবার রাতেই রংপুর এলাকার ঠাকুরঝির পুকুর মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। তার মৃত্যুতে রংপুর ও ডুমুরিয়া এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।