পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর, দৈনিক সারা দুনিয়া।
পানি নিঃকাশনের পথ বন্ধ থাকায় জলাবদ্ধতার কারণে যশোরের কেশবপুরে খতিয়াখালী বিলের প্রায় ১৮০ বিঘা বোরো ধানের উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। জলাবদ্ধ পানিতে ধানের কাছথোড় তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা তাদের ধান বাঁচিয়ে রাখতে ১ মার্চ-২৪ থেকে নিজ খরচে সেচের মাধ্যমে বিলের পানি নিঃকাশনের জন্য ২টি স্যালো (সেচযন্ত্র) দিয়ে পানি নিঃকাশনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কৃষকদের দাবী দ্রুত সেচের ব্যবস্থা না করলে খতিয়াখালী বিলের অধিকাংশ রোপনকৃত বোরো ধান নষ্ট হয়ে যাবে। ওই বিলের পানি নিঃকাশনের দাবীতে আজ সোমবার (১৭ মার্চ) এলাকার কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদন করবেন বলে বিল কমিটির সভাপতি পলাশ রায় ও সাধারণ সম্পাদক অনুকুল দাস এই প্রতিনিধিকে জানান। এদিকে খতিয়াখালী বিলের পানি নিঃকাশনের একমাত্র সংযোগ খাল, বিলগরালিয়ার মুখ বন্ধ থাকায় ওই বিলের পানি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
রোববার খতিয়াখালী বিল পরিদর্শনে গিয়ে জানা যায়, চলতি বোরা মৌসুমে কেশবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্গত খতিয়াখালী বিলে প্রায় ১৮০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। পৌষ মাসে ধান আবাদ করার পর কৃষকরা তাদের ওই জমিতে পরিচর্যা শেষে বর্তমানে তাদের রোপনকৃত ধানে কাছথোড় দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে সংযোগ খালের উপচেপড়া পানিতে ওই বিলের ধানের কাচ থোড়ের মধ্যে পানি ঢুকে ধানের বাইল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতিমধ্যে ৮/১০ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে কৃষকরা দাবী করেন। কৃষকরা জানান, দ্রুত সেচের ব্যবস্থা না করলে এবছর ওই বিলের প্রায় ১০০ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে যাবে, ফলে উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশংকা রয়েছে। বিল কমিটির সভাপতি পলাশ রায় বলেন, ঘের মলিক আসাদ চুক্তি অনুযায়ী এবার বিলের পানি সেচ না দিয়ে বিভিন্ন টাল-বাহানা করে সময় কালক্ষেপন করেছেন। যার কারনে ধান তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে কৃষকরা। এব্যাপারে তদন্ত পূর্বক ঘের মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন তিনি।
খতিয়াখালী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ও কৃষক জয়দেব দাস বলেন, তাদের একমাত্র ফসল হলো বোরো ধান। বিলে এবার ধানের চেয়ারাও ভাল হয়েছে। কিন্তু খালের উপচেপড়া পানিতে ইতিমধ্যে প্রায় ১০০ বিঘা জমির ধানের কাছথোড় তলিয়ে গেছে। কৃষকরা নিজের উদ্যোগে তাদের ধান বাঁচায়ে রাখতে ২টি স্যালোমেশিন দিয়ে বিলের পানি নিঃকাশন করছেন। এতে পানি কমছে না। কমপক্ষে ১০/১৫টি স্যালোদিয়ে দ্রুত সেচের ব্যবস্থা না করলে বিলের প্রায় ৮০ ভাগ ধান নষ্ট হয়ে যাবে।
বিল কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনুকুল দাস বলেন, ঘের মালিক আসাদের অবহেলায় খতিয়াখারী বিলের প্রায় ১৮০ বিঘা ধানের মধ্যে ৮০ ভাগ ইতিমধ্যে তলিয়ে গেছে। দ্রুত সেচের ব্যবস্থা করতে আজ সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার-এর নিকট একটি আবেদন করা হবে। চলতি বছর কেশবপুরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১৪ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে।