কালিয়ারই এসবিএল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক উপস্থিত না হয়ে বেতন নেওয়া সহ নানা অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন।।

স্টাফ রিপোর্টার
0

 


পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর, দৈনিক সারা দুনিয়া।


কেশবপুর উপজেলার বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নে বিদ্যালয়ে না এসে বেতনসহ নানা অনিয়মের মধ্যে চলছে কালিয়ারই (শ্রীফলা, বাউশলা, লালপুর) এসবিএল মাধ্যমিক বিদ্যালয়। অভিযোগসূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিদ্যালয়ে না যেয়ে বেতন ভাতা উত্তোলন করেন প্রধান শিক্ষক এস,এম মনজুর রহমান। মাঝেমধ্যে ১৫ দিন এবং মাঝেমাঝে সাতদিন অন্তর বিদ্যালয়ে এসে একসাথে স্বাক্ষর করেন। বিদ্যালয়ে না গিয়েই তিনি দীর্ঘদিন ধরে বেতন ভাতার সরকারি অংশ অবৈধভাবে উত্তোলন করে চলেছেন। প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের করণিক আজিবর রহমান মাতব্বর হিসেবে কাজ করেন। তার অধীনে চলতে হয় শিক্ষকদের। এনিয়ে শিক্ষকসহ অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষেভের সৃষ্টি হয়েছে। 

গত ১ ফেব্রুয়ারী বার্ষিক পিকনিকের দিনে বাসের মধ্যে শিক্ষক আনিসুর রহমানকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন এবং স্কুলে যেয়ে হাত-পা ভেঙে দেবেন বলে হুমকি দেন আজিবর রহমান। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কর্মী আমিনুর রহমানকে দিয়ে শ্রেণী কক্ষের পাঠদান করানো হচ্ছে। এনিয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করলেও প্রধান শিক্ষক ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও চেয়ারম্যান হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। এসএমসি  গঠনের নীতিমালা লঙ্ঘন করে অভিভাবকদের না জানিয়ে অপকৌশলে কমিটি করে জমা দিয়েছেন প্রদান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়ে জোরপূর্বক বিদ্যালয়ের নামে জমি লিখে নিয়েছেন এবং জমি লিখিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন। 

জানা গেছে, ২০২১ সালের ১ নভেম্বর সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মুনজুর রহমান কালিয়ারই এসবিএল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের শুরুতেই তিনি ধন্যাঢ্য হওয়ায় নিজ অর্থে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেসসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করে নিজে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে শিক্ষা দানে কোমলমতি শিশুদের কৌশলে বঞ্চিত করেছেন। বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী রজব আলী সন্ধ্যার সময় বিদ্যালয়ে লাইট জ্বালিয়ে বাজারে ব্যবসা করেন আর সারারাত বিদ্যালয়ে যান না এবং কোন রাত বিদ্যালয়ে অবস্থান করেন না। উল্লেখ্য, বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) মিটিং-এর মধ্যে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মকবুল পাড়কে প্রধান শিক্ষক কতৃক অপমানিত করা হয়েছে বিষয়ে বর্তমান সভাপতি আব্দুল আজিজ-এর 01975743704 নম্বর ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,"প্রধান শিক্ষকের সাথে তার কথা-কাটাকাটি হয়েছে। আর ইউএনও অফিসে কে বা কারা একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানি।"

এহেন পরিস্থিতিতে জরুরী ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক অবৈধ কমিটি বাতিল করে সরকারি বিধি মোতাবেক নতুন কমিটি গঠন, করণিক আজিবর রহমান কর্তৃক শিক্ষক আনিচুর রহমানের লাঞ্ছিত করার বিচার, প্রধান শিক্ষকের যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যালয়ে আগমন ও প্রস্থানের অনিয়মের সরকারি বিধি মোতাবেক সকল অনিয়ম গুলোর বিচারসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য শণিবার (২৫ ফেব্রুয়ারী-২৪) কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকবৃন্দের মধ্যে মকবুল পাড়, আঃ সাত্তার, মনিরুল ইসলামসহ ৫১২ জন।

এ বিষয়ে 01712523374 নম্বর ফোনে বুধবার ৫:২১ টায় জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক এস এম মুনজুর রহমান মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তুহিন হোসেন বলেন, এলাকাবাসির অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির মিটিং চলাকালিন সময়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ মনজুর রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মকবুল হোসেন পাড়কে লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে কেশবপুর প্রেসক্লাবের সামনে  মানববন্ধন করা হয়েছে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)