পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর, দৈনিক সারা দুনিয়া।
কেশবপুরে সাহিত্যাকাশে উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক মুহম্মদ শফির ৬৫তম জন্মবার্ষিকীতে ৮ গুণিজন পেলেন কবি শফি সম্মাননা স্মারক।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এ উপলক্ষে কেশবপুর পৌরসভার ভবানীপুরের নিজ কবিবাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন, কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান খান-এর সভাপতিত্বে এবং কেশবপুর উদীচী শিল্পগোষ্ঠীর কার্য্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কবি প্রনব মণ্ডল মানব-এর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সাহিত্য সেবা সংসদ (বাসাসেস)-এর সাধারণ সম্পাদক ও কেশবপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক মোতাহার হোসাইন। সুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বাংলা একাডেমি'র, আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ সাহিত্য সেবা সংসদ (বাসাসেস)-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কবি মুহম্মদ শফি। অতিথিদের ক্রেস্ট ও উত্তরীয় পরিধান করিয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন, পরিচালনা কমিটি।
এর পর কেশবপুরের মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল কবির স্মৃতিরক্ষার্থে ভবানীপুর গ্রাম্য সড়কের পাশে তাঁর রচিত কবিতা ফলক উন্মোচন করেন।
যাকজমকপূর্ন অনুষ্ঠানে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য আট গুণীজনকে "কবি মুহম্মদ শফি স্মারক" সম্মাননা হিসাবে ক্রেস্ট দেওয়া হয়েছে। গুনীজনেরা হলেন, বিশিষ্ট সাহিত্যিক, লেখক ও গবেষক অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. ইবাইস আমান (প্রবন্ধ গবেষণা), কবি ও ঔপন্যাসিক এম. এন, এস, তুর্কী (কথা সাহিত্য), প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান খান (শিক্ষা), কবি ও কথাশিল্পী যোগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় (কথা সাহিত্য), কবি ও নাট্যকার মুনছুর আযাদ (রম্যনাট্য), চারুপীঠ একাডেমীর পরিচালক উৎপল দে (চারুশিক্ষা), ছড়াকার, কবি ও উপস্থাপক বিয়াজ লিটন (সামগ্রিক অবদান) এবং দৈনিক গ্রামের কাগজের কেশবপুর প্রতিনিধি কামরুজ্জামান রাজু (সাংবাদিকতা)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর, সামাজিক-সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক সংগঠক ও গবেষক, কবি, বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভি-কথক, গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ-গবেষক এবং জীবনজাগরণদীপ্ত সঙ্গীতশিল্পী ও ধানফুল সাহিত্য গোষ্ঠীসহ অসংখ্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি ড. সন্দীপক মল্লিক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, যশোর এম এম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বিশিষ্ট সাহিত্যিক, লেখক, গবেষক ও কবি ড. ইবাইস আমান।
কবির ৬৫তম জন্মবার্ষিকীতে স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন, পাঁজিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাপস দে, সহকারি অধ্যাপক তাপস মজুমদার, কেশবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মছিহুর রহমান।
অভিব্যক্তি প্রকাশ করে গুণিজনদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, এম. এন, এস, তুর্কী, কথাশিল্পী যোগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, কবি ও নাট্যকার মুনছুর আযাদ, চারুপীঠ একাডেমীর পরিচালক উৎপল দে, ছড়াকার, কবি ও বিয়াজ লিটন, দৈনিক গ্রামের কাগজের কেশবপুর প্রতিনিধি কামরুজ্জামান রাজু।
আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সাহিত্য সেবা সংসদ (বাসাসেস)-এর সহ-সভাপতি কবি ও সিনিয়র সাংবাংদিক ইব্রাহিম রেজা, সদস্য সচিব সাংবাদিক নূরুল ইসলাম খান, সাগরদাঁড়ি কারিগরী কলেজের প্রভাষক কানাই লাল ভট্টাচার্য, কেশবপুর মহিলা কলেজের অধ্যাপক কবি ভদ্রাবতী বিশ্বাস, পাঁজিয়া সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতি সংসদের সভাপতি নজরুল ইসলাম খান, সহ-সভাপতি কবি সুব্রত বসু, কবি কামিনী রায়, সুব্রত ব্যানার্জি, কবি তৃষা চামেলী, ইঞ্জিনিয়ার সুধাংশু মল্লিক, গোবিন্দ বৈরাগী প্রমূখ।
উপস্থিত ছিলেন, কেশবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফ উজ-জামান-খান, এ্যাডভোকেট মিলন মিত্র, সাপ্তাহিক পল্লী কথা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক দেবাশীষ ঘোষ, কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক কবি এম,এ কাশেম অমিয় , পাঁজিয়া পূরবী খেলাঘরের সভাপতি ও পাঁজিয়া সমাজ কল্যান সংস্থার পরিচালক বাবুরালী গোলদার, কেশবপুর সরকারী পাইলট স্কুল এণ্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রবীর সরকার, শিক্ষক ও কবি মনোজ কান্তি হালদার, কেশবপুর উদীচী'র সহ-সভাপতি মাসুদা আক্তার বিউটি সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিক, ছড়াকারসহ গুণীজনেরা।
উল্লেখ্য, মুহম্মদ শফি সুদীর্ঘকাল ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মতিঝিল মডেল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলা বিভাগে শিক্ষকতার পাশাপাশি গ্রন্থাগার পরিচালকের দায়িত্ব পালন শেষে বর্তমান কেশবপুর উপজেলার ভবানীপুর নিজ গ্রামে অবসর জীবনযাপন করছেন। কবিতা, নাটক, উপন্যাস, ছোটগল্প, আঞ্চলিক ভাষার কবিতা, প্রবন্ধ- গবেষণা, শিশুসাহিত্য, জীবনী, ইতিহাস, সম্পাদনা ইত্যাদি মিলে তাঁর এ যাবৎ প্রকাশিত গ্রন্থ শতাধিক। তিনি কেশবপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য। সাহিত্যে অবদানের জন্য এ যাবৎ তিনি দেশ ও বিদেশের অজস্র পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। ‘কাব্যাচার্য’ ও ‘বঙ্গশ্রী’ উপাধি পেয়েছেন ৬৫ বছর বয়সী এই কবি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত গুনিজনসহ সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান, কেশবপুরের সাহিত্যাকাশে উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক কবি মুহম্মদ শফি।