কেশবপুরের সংসদ সদস্য যাদুকরের মতো কেশবপুরবাসীকে অবাক করে দিয়েছেন।

স্টাফ রিপোর্টার
0

 


পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর , দৈনিক সারা দুনিয়া।


যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসন থেকে মোঃ আজিজুল ইসলাম নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে প্রায় ১০ হাজার ভোট বেশি পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। 

রোববার (৭ জানুয়ারি) নির্বাচনে ২৮ বছর বয়সী এই তরুন নেতা আজিজুল ইসলামের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও এই আসনের বর্তমান এমপি শাহীন চাকলাদারকে ৯ হাজার ৬৭৮ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে যাদুকরের মতো কেশবপুরবাসীকে অবাক করে দিয়েছেন। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ২৯৮ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে বয়সে সবার ছোট আজিজুল ইসলাম (খন্দকার আজিজ)। তিনি কেশবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। এভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি জেলা পরিষদের সদস্য হয়েছিলেন এবং পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে আজিজুল ইসলাম অংশগ্রহণ করলে তার পক্ষে এলাকায় যুব সমাজের মধ্যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। তার পাশে আওয়ামী লীগের কোনো পদধারী নেতৃবৃন্দ ছিলেন না। 

আজিজুল ইসলাম বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমার শতভাগ বিশ্বাস ছিল, তবে পারিপার্শ্বিক নানা কারণে ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ফল ঘোষণার পরে বুঝতে পারছি মানুষ আমাকে কত বড় সম্মান দিল। আর সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ভোটের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।

 এজন্য তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি নিজ নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের প্রতি, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তাদের ও গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি আরও বলেন, তরুণদের প্রতি আমার একটা বিশেষ নজর থাকবে। আমরা যেন তাদের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করতে পারি সেই চেষ্টা থাকবে। নিজ নির্বাচনী এলাকা কেশবপুরের বড় কাজ সাধারণ ভোটারদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকা, তাদের সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করা, এলাকার উন্নয়ন করা, যুবসমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখা। এসব বিষয়ে আমি স্থানীয় রাজনীতিবীদ, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মীদের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে এলাকার সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবো।

 আমি চাই, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এ.এস.এইচ.কে সাদেক ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক- এর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন, নতুন নতুন উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে কেশবপুর উপজেলাকে উন্নত এলাকায় পরিণত করা। কেশবপুর পৌরশহরকে আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা। প্রবীণদের পাশাপাশি আমরা যদি তরুণদের সামনে রেখে রাজনীতি করি তাহলে আমার বিশ্বাস তারা ভবিষ্যতের রাজনীতির প্রতি আরও বেশি আকৃষ্ট হবে। তাছাড়া নির্বাচনী পথসভা-জনসভায় যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি অক্ষরে অক্ষরে তা পালন করতে পারলে নিজেকে সফল মনে করবো। জনগণ যে প্রত্যাশা নিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছেন সেই বিষয়টাকে ধরে রাখতে হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রাজনীতিতে তরুণদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিত না। তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা অন্যায়। তরুণদের আলাদা ভাবলে চলবে না। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শুধু বয়স বিবেচনা করে যুদ্ধে যায়নি, দেশের স্বাধীনতার জন্য তরুণরাও ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ফলে তরুণদের কাজে লাগিয়ে দেশের জন্য ভালো কিছু করা সম্ভব। যেটা আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজেও বিশ্বাস করেন। তিনি অসংখ্য তরুণদের রাজনীতি, জনপ্রতিনিধি হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এজন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। দেশবাসী চেয়েছিলেন, "স্থানীয় প্রার্থীকে ভোট দিবো" এমন জোয়ার তাঁকে এ অবস্থানে পৌঁছাতেও ভূমিকা রেখেছে। মঙ্গলবার সংসদ ভবনে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত কেশবপুরের এমপি তারুণ্যের অহংকার খন্দকার আজিজুল ইসলাম।

নির্বাচিত হয়ে সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকালে তিনি তাঁর পিতা-মাতার কবর জিয়ারত করে গোপালগঞ্জের টুৃঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। রাতে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। ভোটযুদ্ধের যাদুকর সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল আজিজ (খন্দকার আজিজ) কেশবপুরবাসীর কাছে দোয়া/আশীর্বাদ প্রর্থনা করেন।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)