পরেশ দেনাথ, কেশবপুর, যশোর , দৈনিক সারা দুনিয়া।
কেশবপুর সংসদীয় আসনে ৪ প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্দ প্রচারে নামছেন এমপি প্রার্থীরা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে যশোর কেশবপুর সংসদীয় আসনের ৪ প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মিলনায়তনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার সকাল পৌনে ১০টা থেকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেন। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী আচরণবিধি মানার নির্দেশনা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এসময় উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারসহ জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা। এদিকে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় মাঠে নামছেন প্রার্থীরা। আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট চাওয়া শুরু করেছেন।
যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত শাহীন চাকলাদার পেয়েছেন নৌকা প্রতীক, স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আমির হোসেন কাইচি, স্বতন্ত্র ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক ও জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ আজিজুল ইসলাম ঈগল পাখি ও জাতীয় পার্টির জি এম হাসান পেয়েছেন লাঙল প্রতীক । ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ৭ জানুয়ারি হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আজিজুল ইসলাম (প্রতিক-ঈগল) সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে কেশবপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, ১ টি পৌরসভা ও ১১ টি ইউনিয়ন নিয়ে যশোর-৬ আসন গঠিত হয়েছে। এই সংসদীয় আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ১৭ হাজার ৯২৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৯ হাজার ১৩ ও মহিলা ১ লাখ ৮ হাজার ১০ জন ও তৃতীয় লীঙ্গের ১ জন ভোটার রয়েছে । নিরপেক্ষ ভাবে ভোট গ্রহণ করতে ৮১ টি ভোট কেন্দ্রে ৫০৮ কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রচারে প্রার্থীদের যা মানতে হবে, প্রার্থীর নির্বাচনি পোস্টার ঝুলিয়ে রাখতে হবে দড়িতে। পোস্টারে কেবল নির্বাচনি প্রতীক, প্রার্থীর ছবি এবং দলীয় প্রধানের ছবি ছাপানো যাবে। পোস্টার হবে নির্দিষ্ট মাপের এবং সাদা কালো; রঙিন পোস্টার নিষিদ্ধ।
নির্বাচনি প্রচারে কোনো গেইট বা তোরণ নির্মাণ করা যাবে না। চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না কোনোভাবেই।
প্রার্থী কিংবা সমর্থকরা ভোটের সমাবেশের জন্য ৪০০ বর্গফুটের বেশি আয়তনের প্যান্ডেল তৈরি করতে পারবেন না।
প্রচারের সময় প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনে প্রতি ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ একটি নির্বাচনি ক্যাম্প স্থাপন করা যাবে।
প্রচারের সময় বৈদ্যুতিক আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ। ভোটারদের কোনো ধরনের খাবার বা উপঢৌকন দেওয়া যাবে না।
মাইকে ভোটের প্রচার চালানো যাবে কেবল দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
তফসিল ঘোষণার পর থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রকল্প অনুমোদন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অথবা উদ্বোধন এবং অনুদান বা অর্থ বরাদ্দ দেওয়া যাবে না।
দেয়ালে লিখে কোনো ধরনের প্রচার চালানো যাবে না। কোনো যানবাহন, দালান, সেতু, সড়ক দ্বীপ ও ডিভাইডারেও ভোটের প্রচার নিষিদ্ধ।
নির্বাচনি প্রচারের ক্ষেত্রে প্রতীক হিসাবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না।
মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোনো উপাসনালয়ে কোনো প্রকার নির্বাচনি প্রচার চালানো যাবে না।
প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, হুইপ, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা ও তাদের সমান পদমর্যাদার কেউ, সংসদ সদস্য এবং মেয়ররা ভোটের প্রচারে প্রোটকল পাবেন না। কোনো উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধনও তারা করতে পারবেন না, যা প্রচার বলে গণ্য হতে পারে।
এক্ষেত্রে সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনি কর্মসূচি মেশানো যাবে না। প্রচারে সরকারি যানবাহন ও অন্যান্য সুবিধা ব্যবহার করা যাবে না। প্রচারে সরকারি চাকরিজীবীদের ব্যবহার করা যাবে না।
প্রার্থী বা এজেন্ট না হলে ভোট দেওয়া ছাড়া ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকবে এবং ভোট দেওয়া ছাড়া নির্বাচনের আগে এলাকায় সফর ও প্রচারও নিষিদ্ধ।
প্রচারের সময় উস্কানিমূলক, মানহানিকর, ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয়া এমন বক্তব্য দিলেও তা হবে আচরণবিধির লঙ্ঘন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, দলীয় প্রার্থীর পোস্টারে দলীয় প্রতীক, প্রার্থী ও দলীয় প্রধানের ছবি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। কোনোভাবে জোট প্রধানের ছবি ব্যবহার করা যাবে না। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজের ছবি ও প্রতীক ব্যবহার করতে পারবেন। কোনো দলীয় প্রধানের ছবি ব্যবহার করতে পারবেন না স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
সেই সঙ্গে আচরণবিধি মেনে প্রচার, পোস্টার ছাপানোসহ অন্যান্য বিধি মানতে হবে।