ষ্টাপ রিপোর্টার , সাটুরিয়া -মানিকগঞ্জ ,দৈনিক সারা দুনিয়া।
কিছু দিন আগে মানিকগঞ্জ সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটী ইউনিয়নে ভূমি অফিসের নায়েবের অপকর্ম, অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে যে সমস্ত সংবাদকর্মী নিউজ করেছে তাদের নামে মামলা দিবে বলে ভয় দেখাচ্ছেন ঐ কর্মকর্তা।
এছাড়া নায়েব সাহেব নিজের অনিয়মের কথা ধামাচাপা দিতে কম্পিউটার অপারেটিং কাজের নিয়োজিত সাকিবুল হাসান কে অফিস থেকে বাহির করে দিয়েছে ।
প্রসঙ্গত মানিকগঞ্জ সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অতিরিক্ত টাকা ছাড়া কোনো সেবা পাওয়া যায়না বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। এ ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। তাদের অভিযোগ, অফিসে ভূমি খারিজ করতে দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
তারপরেও ঘুরতে হচ্ছে মাসের পর মাস। আর কোনমতে খারিজ পেলেও দাখিলার (খাজনা আদায়কৃত রশিদ) জন্য আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন।
চর ফুকুরহাটী এলাকার মৃত কেছু মুদ্দিন ছেলে মো :সমেজুদিন জানান আমার জমিতে মিসকেস ব্যাপারে যাহার নং
২২৮০/ ২২-২৩ ইং ফরিদ নায়েব আমার কাছ থেকে ১০০০ হাজার টাকা নেয় । আমার জমির কাগজ ব্যাংকে জমা দিয়ে কিছু টাকা তুলেছি। আমি দির্ঘদিন ধরে ভূমির দখলে থাকার পর ও সরজমিনে তদন্ত না করে জমিতে আমার দখল নাই এই প্রতিবেদন দেন ফুকুরহাটী সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন।
সেবা নিতে আসা জসিম জানান আমি একটি নামজারি প্রস্তাবের জন্য নায়েব সাহেব কে ৫০০ টাকা দিয়েছিলাম। তিনি টাকা কম হয়েছে বলে জানায় যে খানে সরকারি নিয়মে কোন টাকা নেওয়ার বিধান নাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানায় ফুকুরহাটী ভূমিকর্মকর্তা ঘরোয়া দলিলে নামজারির জন্য অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় তাকে। অতিরিক্ত টাকা না দিনের পর দিন ঘুরতে হয় ভূমি অফিসে।
এসব কাজের সুবিধা জন্য তার মনোনীত অফিসের ভিতরে সাকিবুল নামের একজন কম্পিউটার অপারেটর কে অফিসের ভিতরে বসিয়ে ছিল । অফিসে খাজনার জন্য তাকে দিতে হয় ২০০ থেকে ৫০০ শত টাকা।
কিছু দিন আগে গণমাধ্যমে নায়েবের বিরুদ্ধে একাধিক নিউজ প্রকাশ হওয়ার পর নায়েব সাহেব নিজের অনিয়মের কথা ধামাচাপা দিতে কম্পিউটার অপারেটিং কাজের নিয়োজিত সাকিবুল হাসান কে অফিস থেকে বাহির করে দিয়েছে ।
এ বিষয়ে কম্পিউটার অপারেটিং কাজে নিয়োজিত সাকিবুল জানান আমাকে ফুকুরহাটী ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আমাকে অফিসের ভিতরে বসার ব্যবস্হা করে দিয়েছিল। তার কথা মত আমি ভূমি সেবা দিয়েছি এখন অফিসের কি যেন ঝামেলা চলছে তাই আমাকে কিছু দিন অফিসে আসতে নিষেধ করেছেন তাই আমি যাই না।
নাম প্রকাশ না শর্তে স্হানীয় কয়েকজন জানান, এই অফিসে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন মনগড়া ভাবে অফিস পরিচালনা করেন। সরকারি অফিসে সময় মত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার কথা থাকলে ও তা কখনো করে, কখনো জাতীয় পতাকা উত্তোলন ছাড়ায় অফিস চালায়। বিভিন্ন সময়ে সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে না।
সে টাকা ছাড়া কিছু বুঝেনা তাকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে খুশি না করলে ভূমি সেবা পাওয়া যায় না। কিছুদিন আগে ভূমি অফিসে নামজারির জোত নং খোলা ও সরকারি দাখিলা পরিষোধ জন্য গেলে। তিনি আমাকে অনেক সময় বসিয়ে রাখে। ভূমি কর খাজনার রেজিষ্ট্রেশন করতে ফরিদ উদ্দিন সাকিবুলের কাছে পাঠায় তাকে ২০০ টাকা দেয়।পাশের রুমে অফিস সহকারীকে ২০০ টাকা। এবং ফরিদ সাহেব কে এক হাজার টাকা দিয়েছি দাখিলার জন্য, রশিদ পেয়েছি ১০০ টাকার। এই হল তাদের সেবা। বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতার দাপট দেখায় সে। তাই আমরা ভূমি অফিসে কম যাই।
সেবা নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি
অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয় সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। এবং তার বিরুদ্ধে যারা নিউজ করেছে তাদের মামলার দিবে বলে ভয় দেখান।
সরকারের ভূমি সেবার বিষয়ে স্হানীয় জনপ্রতিনিধি ও মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য রাজ্জাক হোসাইন রাজ জানান, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার,বান্ধব সরকার, ডিজিটাল সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার
দেশে ভূমি সেবা হয়রানির প্রতিরোধে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। ভূমি সেবা সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে। আর কিছু অসাধু ব্যক্তিরা সেবার নামে সাধারণ জনগণ কে হয়রানি করছে এটি দু:খজনক । যারা সেবার নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমি (অ.দা) শান্তা রহমান জানান অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।