মধ্যপ্রাচ্য, দৈনিক সারা দুনিয়া।
আজ ২৩ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের জাতীয় দিবস। ১৯৩২ সালের এই দিনে বাদশাহ আবদুল আজিজ অধীকৃত গোটা অঞ্চল নিয়ে তাঁর সউদ গোষ্ঠীর নামকরণে সউদের আরব তথা #সৌদি_আরব নামে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা লাভ করেন।
আজ ২৩ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের জাতীয় দিবস। দিবসটি মূলত সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠা দিবস। ১৯৩২ সালের এই দিনে বাদশাহ আবদুল আজিজ অধীকৃত গোটা অঞ্চল নিয়ে তাঁর সউদ গোষ্ঠীর নাম অনুসারে সউদের আরব তথা সৌদি আরব নাম রাখেন। পাশাপাশি তিনি রাজতন্ত্র ঘোষণা করেন।
পবিত্র মক্কা ও পবিত্র মদিনার কারণে বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্ব সৌদি আরবকে সম্মানের চোখে দেখে থাকে। বাংলাদেশি কর্মীরা তিন যুগ ধরে সৌদি আরবে জীবিকার তাগিদে বসবাস করে আসছেন। বর্তমানে প্রায় ২০ লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক বিভিন্ন পেশায় দেশটিতে নিয়োজিত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
বাদশাহ আবদুল আজিজ ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে কুয়েত থেকে এসে রিয়াদ দখল করেন। নজদের কেন্দ্রস্থল রিয়াদ। এখানে আবদুল আজিজের পূর্বপুরুষরা শাসন ক্ষমতায় ছিলেন।
তুর্কি সালতানাতের সহযোগিতায় আল রশিদ রিয়াদ দখল করেছিলেন। এতে বাদশাহ আবদুল আজিজের পিতারা কাতার, বাহরাইন হয়ে কুয়েতে এসে বসবাস করতে থাকেন। ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণকারী সাহসী যুবক বাদশাহ আবদুল আজিজ মতান্তরে ৬০ জন অতি আপন আত্মীয় সহযোদ্ধা নিয়ে কুয়েত থেকে এসে রিয়াদ দখল করেন। আমির শরিফ হোসাইন ব্রিটিশের সহযোগিতা নিয়ে জেদ্দা হয়ে সাগরপথে ফিলিস্তিনের দিকে চলে যান। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বিশাল হেজাজ অঞ্চলও বাদশাহ আবদুল আজিজের অন্তর্ভুক্ত হয়।
সে সময় থেকে দীর্ঘ ২১ বছর তিনি শক্ত হাতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত বিশাল দেশকে শাসন করে ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে আবদুল আজিজ ইন্তেকাল করেন। এতে স্বাভাবিক নিয়মে প্রথম পুত্র হিসেবে সউদ বাদশাহ হন। কিন্তু তিনি বারবার অযোগ্যতার প্রমাণ রাখতে থাকায় ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে ফয়সাল বাদশাহের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি সৌদি আরবের পাশাপাশি মুসলিম বিশ্বের পক্ষে নেতৃত্ব তথা মুরব্বিয়ানার ভূমিকা রেখে গেছেন। কিন্তু ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে এসে ভ্রাতুষ্পুত্রের গুলিতে নিহত হন। বাদশাহ ফয়সাল নিহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সত্ভাই বাদশাহ খালেদ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন নরম ও শান্ত প্রকৃতির। বাদশাহ খালেদ মাত্র সাত বছর দেশ শাসন করে ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। তাঁর আমলে সৌদি আরবের অগ্রগতির সূচনা বলা যাবে।
তাঁর ইন্তেকালের সঙ্গে সঙ্গে যুবরাজ ফাহাদ বাদশাহ হন। তাঁর আমলকে সৌদি আরবে নানা দিক থেকে স্বর্ণযুগ বলা চলে। বিশেষ করে হজ, ওমরাহ, জিয়ারতকারীদের কল্যাণে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি রিয়াদে প্রভাবশালী সুদাইরি বংশের কন্যা হাসসা আল সুদাইরির প্রথম পুত্র।
ফাহাদ ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। ফাহাদরা সাত ভাই, তাদের সুদাইরি সেভেন বলা হয়। বাদশাহ ফাহাদ জীবনের শেষদিকে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে যুবরাজ আবদুল্লাহ বাদশাহের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে ফাহাদ ইন্তেকাল করলে আবদুল্লাহ পুরোপুরি বাদশাহ হন।
১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের ১ আগস্ট রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন বাদশাহ আবদুল্লাহ। বাদশাহ আবদুল্লাহর আছে দীর্ঘ ৯০ বছরের বর্ণাঢ্য জীবন। তিনি মায়ের দিক দিয়ে বাদশাহ আবদুল আজিজের একমাত্র পুত্র। তাঁর আমলে বাদশাহ ফাহাদের সহোদর ছোট ভাই সুলতান ও নায়েফ যুবরাজ থাকা অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। বাদশাহ আবদুল্লাহ বাদশাহ ফাহাদের মতো খাদেমুল হারামাইনিশ শরিফাইন টাইটেল বা লকব ধারণ করে নিয়েছিলেন।
২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি বাদশাহ আবদুল্লাহ ইন্তেকাল করলে সৌদি রাজ পরিবারে প্রভাবশালী সুদাইরি পরিবারের কন্যার কনিষ্ঠ ও সপ্তম পুত্র বর্তমান বাদশাহ সালমান বাদশাহি পদ লাভ করেন।
এদিকে বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ রয়েছে উল্লেখ করে সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রী বাংলাদেশে আরও বেশি সৌদি বিনিয়োগের সম্ভাবনা আছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ সৌদি সফররত প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠককালে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিনিধিদল বিনিময়ের গুরুত্ব তুলে ধরে সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রীকে আগামী নভেম্বরের ২৮ ও ২৯ তারিখে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের অনুরোধ জানালে মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ তা সাদরে গ্রহণ করেন ।
সাউদি আরবের #জাতীয়_দিবস দিনটির জন্য তখনকার বাদশা মহোদয় সহ রাজতন্ত্রের স্বাধীনতা লাভে অবদান রেখেছেন আজ যারা আমাদের মাঝে নেই। সকলর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং রুহ মাগফিরাত কামনা করি আমিন!