রাশিয়ায় একটি প্রাইভেট বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১০ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছে। বিমানটির যাত্রী তালিকায় দেশটির ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের নামও রয়ে
ছে বলে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় বিমান পরিবহন সংস্থা রোসাভিয়েশনের বরাতে আরটি, স্পুনিক, বিবিসিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে।
গতকাল বুধবার বিমানটি রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গে যাওয়ার সময় তিয়েভের অঞ্চলে কুঝেনকিনো গ্রামের কাছে বিধ্বস্ত হয়।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে রোসাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বিমানটির ১০ আরোহীর মধ্যে তিনজন ক্রু ও সাতজন যাত্রী ছিল। প্রাথমিক তথ্য বলছে, আরোহীদের সবাই নিহত হয়েছে।
বিবিসি জানায়, ওয়াগনার সংশ্লিষ্ট একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোনে বলা হয়েছে, মস্কোর উত্তরে তিয়েভের অঞ্চলে বিমানটিকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী।
রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত আরোহীদের একজনের নাম প্রিগোশিন।
তবে তাঁরা ওই দুর্ঘটনা নিয়ে আর কোনো তথ্য জানাননি।
ওয়াগনারপ্রধান প্রিগোশিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশটিতে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নেয় ভাগনার সেনারা। তবে রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন প্রিগোশিন।
গত ২৩ জুন এই অসন্তোষের প্রকাশ ঘটে। প্রিগোশিন বিদ্রোহ করে বসেন।
রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উত্খাতের জন্য ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মস্কোর দিকে সেনাদের নিয়ে অভিযান শুরু করেন তিনি। পথে কয়েকটি শহর ও গুরুত্বপূর্ণ একটি রুশ সেনাঘাঁটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় ওয়াগনারের যোদ্ধারা।
প্রিগোশিনের এই বিদ্রোহের জেরে ভ্লাদিমির পুতিন সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন।
পরে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেংকোর মধ্যস্থতায় অভিযান বন্ধের ঘোষণা দেন প্রিগোশিন। সমঝোতায় বলা হয়, প্রিগোশিনসহ ওয়াগনার সেনারা রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে চলে যাবে। পরে ওয়াগনার সেনারা বেলারুশে চলে যায়। তবে ওয়াগনারপ্রধান প্রিগোশিনের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে যায়।
সংবাদমাধ্যমের খবরে হয়, প্রিগোশিন বেলারুশে আছেন। পরে তাঁর রাশিয়া সফর এবং পুতিনের সঙ্গে দেখা করার খবরও বের হয়। কিন্তু তিনি আর প্রকাশ্যে আসেননি।
সম্প্রতি প্রিগোশিনের একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। ওয়াগনার গ্রুপের টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলোতে পোস্ট করা ওই ভিডিওতে তাঁকে যুদ্ধের সাজপোশাকে দেখা যায়।
ভিডিও দেখে ধারণা করা হয়, তিনি আফ্রিকায় আছেন। ভিডিওতে তিনি বলেন, ওয়াগনারে তাঁরা নতুন যোদ্ধা নিয়োগ করবেন।